অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

১ শামুয়েল 26 Kitabul Mukkadas (MBCL)

হযরত দাউদ (আঃ) আবার তালুতকে দয়া করলেন

1. পরে সীফের লোকেরা গিবিয়াতে তালুতের কাছে গিয়ে বলল, “যিশীমোনের কাছে হখীলা পাহাড়ে দাউদ লুকিয়ে আছে।”

2. তালুত তখন তিন হাজার বাছাই করা ইসরাইলীয় সৈন্য নিয়ে সীফের মরুভূমিতে দাউদকে খুঁজতে গেলেন।

3. যিশীমোনের কাছে রাস্তার পাশে হখীলা পাহাড়ের উপরে তালুত ছাউনি ফেললেন আর দাউদ ছিলেন মরুভূমিতে। দাউদ বুঝতে পারলেন হয়তো তালুত তাঁর খোঁজে মরুভূমিতে এসেছেন।

4. সেইজন্য তিনি লোক পাঠিয়ে জানতে পারলেন যে, তালুত সত্যিই এসেছেন।

5. তালুত যেখানে ছাউনি ফেলেছিলেন দাউদ সেখানে গেলেন এবং তালুত ও তাঁর সৈন্যদলের সেনাপতি নেরের ছেলে অবনের যেখানে শুয়ে ছিলেন তা দেখে নিলেন। তালুত ছাউনির মধ্যে মালপত্রের মাঝখানে শুয়ে ছিলেন, আর তাঁর চারদিকে শুয়ে ছিল তাঁর সৈন্যেরা।

6. দাউদ তখন হিট্টীয় অহীমেলক ও সরূয়ার ছেলে যোয়াবের ভাই অবীশয়কে বললেন, “ঐ ছাউনির মধ্যে তালুতের কাছে তোমরা কে আমার সংগে যাবে?”অবীশয় বলল, “আমি যাব।”

7. রাতের বেলায় দাউদ ও অবীশয় তালুতের সৈন্যদের মধ্যে গেলেন। তালুত ছাউনিতে মালপত্রের মাঝখানে ঘুমিয়ে ছিলেন। তাঁর বর্শাটা তাঁর মাথার কাছে মাটিতে পোঁতা ছিল। অবনের ও সৈন্যেরা তাঁর চারপাশে শুয়ে ছিল।

8. এই অবস্থা দেখে অবীশয় দাউদকে বলল, “আল্লাহ্‌ আজ আপনার শত্রুকে আপনার হাতে তুলে দিয়েছেন। অনুমতি দিন, আমার বর্শার এক ঘায়ে ওঁকে মাটিতে গেঁথে ফেলি। আমাকে দু’বার আঘাত করতে হবে না।”

9. দাউদ তাকে বললেন, “না, ওঁকে মেরে ফেলো না। মাবুদের অভিষেক-করা বান্দার উপর হাত তুলে কে নির্দোষ থাকতে পারে?

10. আল্লাহ্‌র কসম যে, মাবুদ নিজেই ওকে শাস্তি দেবেন। হয় তিনি এমনিই মারা যাবেন, না হয় যুদ্ধে গিয়ে শেষ হয়ে যাবেন।

11. কিন্তু মাবুদের অভিষেক-করা বান্দার উপর হাত তুলতে মাবুদ কখনও আমাকে অনুমতি দেবেন না। চল, এখন আমরা তাঁর মাথার কাছ থেকে বর্শাটা এবং পানির পাত্রটা তুলে নিয়ে ফিরে যাই।”

12. দাউদ তারপর তালুতের মাথার কাছ থেকে তাঁর বর্শা ও পানির পাত্রটা নিয়ে চলে গেলেন। কেউ তা দেখল না, জানল না, কেউ জেগেও উঠল না। তারা সবাই ঘুমাচ্ছিল, কারণ মাবুদ তাদের একটা গভীর ঘুমের মধ্যে ফেলে রেখেছিলেন।

13. এর পর দাউদ ছাউনি থেকে বেশ কিছুটা দূরের একটা পাহাড়ের উপরে গিয়ে দাঁড়ালেন।

14. তারপর দাউদ সৈন্যদের এবং নেরের ছেলে অবনেরকে ডাক দিয়ে বললেন, “অবনের, আপনি কি কিছু বলবেন না?”জবাবে অবনের বলল, “কে তুমি, বাদশাহ্‌কে ডাকাডাকি করছ?”

15. দাউদ বললেন, “আপনি তো একজন বীর, তাই না? বনি-ইসরাইলদের মধ্যে আপনার সমান আর কে আছে? কেন আপনি শত্রুর বিপক্ষে আপনার মালিক মহারাজকে পাহারা দিয়ে রাখলেন না? আপনার মালিক মহারাজকে মেরে ফেলবার জন্য একজন লোক গিয়েছিল।

16. আপনি যা করেছেন তা মোটেই ঠিক হয় নি। আল্লাহ্‌র কসম যে, আপনি ও আপনার লোকদের মরা উচিত, কারণ আপনাদের মালিক, যিনি মাবুদের অভিষেক-করা বান্দা, তাঁকে শত্রুর বিপক্ষে আপনারা পাহারা দিয়ে রাখেন নি। বাদশাহ্‌র মাথার কাছে তাঁর যে বর্শা ও পানির পাত্র ছিল সেগুলো কোথায়?”

17. তালুত দাউদের গলার আওয়াজ চিনে বললেন, “বাবা দাউদ, এ কি সত্যিই তোমার গলার আওয়াজ?”দাউদ বললেন, “জ্বী মহারাজ, এ আপনার গোলামেরই গলার আওয়াজ।”

18. তারপর তিনি আরও বললেন, “কেন আমার মালিক তাঁর গোলামের পিছনে তাড়া করে বেড়াচ্ছেন? আমি কি করেছি? কি অন্যায় করেছি?

19. আমার মহারাজ, আমার প্রভু, এখন দয়া করে আপনার গোলামের কথা শুনুন। যদি মাবুদই আপনাকে আমার বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে থাকেন তবে আমার দেওয়া কোরবানী তাঁর কাছে গ্রহণযোগ্য হোক। কিন্তু যদি মানুষ তা করে থাকে তবে তাদের উপর যেন মাবুদের গজব নেমে আসে, কারণ তারা আজ মাবুদের দেওয়া সম্পত্তিতে আমার যে ভাগ আছে তা থেকে আমাকে তাড়িয়ে দেবার চেষ্টা করছে। তারা বলছে, ‘চলে যাও, দেব-দেবীর পূজা কর গিয়ে।’

20. কিন্তু আপনার কাছে আমার এই মিনতি যে, মাবুদ নেই এমন দূরের কোন জায়গায় যেন আমার রক্তপাত না হয়। লোকে পাহাড়ে যেমন করে তিতির পাখী ধরতে যায় বনি-ইসরাইলদের বাদশাহ্‌ তেমনি করে একটা পোকার খোঁজে বের হয়ে এসেছেন।”

21. তখন তালুত বললেন, “আমি গুনাহ্‌ করেছি। বাবা দাউদ, তুমি ফিরে এস। আজ তুমি আমার জীবনের কত দাম দিলে; আমি আর তোমার ক্ষতি করতে চেষ্টা করব না। সত্যিই এই মহা অন্যায় করে আমি বোকামি করেছি।”

22. জবাবে দাউদ বললেন, “মহারাজ, এই যে সেই বর্শা, আপনার কোন লোক এসে ওটা নিয়ে যাক।

23. মাবুদ প্রত্যেক লোককে তার বিশ্বস্ততা ও সততার পুরস্কার দেন। মাবুদ আজ আপনাকে আমার হাতে তুলে দিয়েছিলেন, কিন্তু আমি মাবুদের অভিষেক-করা বান্দার উপর হাত তুলতে চাই নি।

24. আজ আমার কাছে আপনার জীবন যেমন মহামূল্যবান হল তেমনি মাবুদের কাছেও যেন আমার জীবন মহামূল্যবান হয়। তিনি যেন সমস্ত বিপদ থেকে আমাকে উদ্ধার করেন।”

25. তখন তালুত দাউদকে বললেন, “বাবা দাউদ, ধন্য তুমি! তুমি অবশ্যই অনেক বড় বড় কাজ করবে আর জয়ী হবে।”এর পর দাউদ তাঁর পথে চলে গেলেন আর তালুতও নিজের বাড়ীতে ফিরে গেলেন।