21. বনি-ইসরাইলরা ও ফিলিস্তিনীরা যুদ্ধ করবার জন্য মুখোমুখি তাদের সৈন্য সাজাল।
22. তখন দাউদ তাঁর জিনিসগুলো মাল-রক্ষকের কাছে রেখে দৌড়ে সৈন্যদলের মধ্যে ঢুকে ভাইদের জিজ্ঞাসা করলেন যে, তারা কেমন আছে।
23. তিনি যখন ভাইদের সংগে কথা বলছিলেন তখন গাৎ শহরের সেই ফিলিস্তিনী বীর জালুত তার সৈন্যদল থেকে বের হয়ে আগের মতই কথা বলতে লাগল, আর দাউদ তা শুনলেন।
24. এদিকে ইসরাইলীয় সৈন্যেরা সবাই ঐ লোকটিকে দেখে ভীষণ ভয়ে তার সামনে থেকে পালিয়ে গেল।
25. বনি-ইসরাইলরা বলাবলি করছিল, “ঐ যে লোকটা বার বার বের হয়ে আসে, ওকে তোমরা দেখেছ তো? সে বনি-ইসরাইলদের টিটকারি দিতে আসে। ঐ লোকটিকে যে মেরে ফেলতে পারবে বাদশাহ্ তাকে প্রচুর ধন-সম্পত্তি দেবেন। তাঁর মেয়েকেও তিনি তার সংগে বিয়ে দেবেন আর ইসরাইল দেশে তার পরিবারকে খাজনা ও বাদশাহ্র অন্যান্য দাবি-দাওয়া থেকে রেহাই দেবেন।”
26. যে লোকেরা কাছে দাঁড়িয়ে ছিল দাউদ তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “যে এই ফিলিস্তিনীকে মেরে ফেলে বনি-ইসরাইলদের উপর থেকে এই অসম্মান দূর করবে তার প্রতি কি করা হবে? এই খৎনা-না-করানো ফিলিস্তিনীটা কে, যে জীবন্ত আল্লাহ্র সৈন্যদলকে টিটকারি দেয়?”
27. তাতে লোকেরা যা বলাবলি করছিল সেইমতই তাঁকে জানানো হল যে, সেই ফিলিস্তিনীকে যে হত্যা করবে তার জন্য কি কি করা হবে।
28. দাউদের বড় ভাই ইলীয়াব লোকদের সংগে তাঁর কথাবার্তা শুনে রাগে জ্বলে উঠলেন। তিনি বললেন, “তুই কেন এখানে এসেছিস? মরুভূমিতে ভেড়াগুলো কার কাছে রেখে এসেছিস? তোর দেমাক আর মনের দুষ্টামির কথা আমার জানা আছে। তুই যুদ্ধ দেখতে এসেছিস, তাই না?”
29. দাউদ বললেন, “বাঃ, আমি কি করলাম? আমি তো কেবল একটা কথা জিজ্ঞাসা করেছি।”
30. এই বলে তিনি অন্য লোকের কাছে গিয়ে তাকে সেই একই কথা জিজ্ঞাসা করলেন আর লোকেরা তাঁকে আগের মতই জবাব দিল।
31. দাউদ যা বলছিলেন তা অন্যেরা শুনে তালুতকে জানাল। তখন তালুত তাঁকে ডেকে পাঠালেন।
32. দাউদ তালুতকে বললেন, “ঐ ফিলিস্তিনীটাকে দেখে কারও ঘাবড়াবার দরকার নেই। আপনার এই গোলাম গিয়ে তার সংগে যুদ্ধ করবে।”
33. তালুত বললেন, “তুমি ঐ ফিলিস্তিনীটার সংগে কি করে যুদ্ধ করবে? তুমি তো মাত্র সেদিনকার ছেলে, আর ঐ ফিলিস্তিনীটা অল্প বয়স থেকেই যোদ্ধা।”
34-35. দাউদ তালুতকে বললেন, “আপনার এই গোলাম তার বাবার ভেড়ার পাল চরায়। যখনই কোন সিংহ বা ভল্লুক এসে পাল থেকে ভেড়া ধরে নিয়ে যেত তখনই আমি তার পিছনে পিছনে দৌড়ে গিয়ে তাকে মেরে তার মুখ থেকে ভেড়াটাকে রক্ষা করতাম। সে উঠে যখন আমাকে রুখে দাঁড়াত তখন আমি তার দাড়ি ধরে আঘাত করে তাকে মেরে ফেলতাম।
36. সিংহ, ভল্লুক দুই-ই আপনার এই গোলামের হাতে মারা পড়েছে, আর এই খৎনা-না-করানো ফিলিস্তিনীটার দশাও ঐগুলোর মত হবে, কারণ সে জীবন্ত আল্লাহ্র সৈন্যদলকে টিটকারি দিয়েছে।”
37. দাউদ আরও বললেন, “মাবুদ, যিনি আমাকে সিংহ আর ভল্লুকের থাবা থেকে রক্ষা করেছেন, তিনিই আমাকে ঐ ফিলিস্তিনীটার হাত থেকেও রক্ষা করবেন।”তখন তালুত দাউদকে বললেন, “তবে যাও, মাবুদ তোমার সংগে থাকুন।”
38. এই বলে তালুত তাঁর নিজের পোশাক দাউদকে পরিয়ে দিলেন। তিনি তাঁর মাথায় দিলেন ব্রোঞ্জের টুপী আর গায়ে দিলেন যুদ্ধের সাজ।
39. দাউদ তাঁর পোশাকের উপরে তালুতের তলোয়ারটা বেঁধে হাঁটতে চেষ্টা করলেন, কারণ আগে তিনি তা কখনও করেন নি।তিনি তালুতকে বললেন, “এই সব পরে আমি যেতে পারব না, কারণ এর আগে আমি কখনও তা করি নি।” এই বলে তিনি সেগুলো খুলে ফেললেন।
40. তারপর তাঁর লাঠিখানা তিনি হাতে নিলেন এবং ছোট্ট পাহাড়ী নদীর মধ্য থেকে পাঁচটা মসৃণ পাথর বেছে নিয়ে তাঁর চামড়ার থলির মধ্যে রাখলেন। এই রকম থলি রাখালেরা ব্যবহার করত। তারপর তাঁর ফিংগাটা নিয়ে তিনি সেই ফিলিস্তিনীর দিকে এগিয়ে যেতে লাগলেন,
41. আর সেই ফিলিস্তিনীও দাউদের দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। তার ঢাল বহনকারী ঢাল নিয়ে তার সামনে সামনে আসছিল।