অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

১ বাদশাহ্‌নামা 21 Kitabul Mukkadas (MBCL)

নাবোতের আংগুর ক্ষেত

1. এর পরে যিষ্রিয়েলীয় নাবোতের আংগুর ক্ষেত নিয়ে একটা ঘটনা ঘটে গেল। এই আংগুর ক্ষেতটা ছিল যিষ্রিয়েলে সামেরিয়ার বাদশাহ্‌ আহাবের রাজবাড়ীর কাছেই।

2. আহাব নাবোৎকে বললেন, “সবজীর বাগান করবার জন্য তোমার আংগুর ক্ষেতটা আমাকে দিয়ে দাও, কারণ ওটা আমার রাজবাড়ীর কাছেই। এর বদলে আমি তোমাকে আরও ভাল একটা আংগুর ক্ষেত দেব কিংবা যদি চাও তবে তার উচিত মূল্যও তোমাকে দেব।”

3. কিন্তু জবাবে নাবোৎ বলল, “আমার বাপ-দাদার কাছ থেকে পাওয়া সম্পত্তি যে আমি আপনাকে দিয়ে দিই মাবুদ যেন তা হতে না দেন।”

4. “আমার বাপ-দাদাদের সম্পত্তি আমি আপনাকে দেব না,” যিষ্রিয়েলীয় নাবোতের এই কথার জন্য আহাব মুখ কালো করে ও বিরক্ত হয়ে বাড়ী চলে গেলেন। তিনি বিছানায় শুয়ে মুখ ফিরিয়ে রইলেন, খেতে চাইলেন না।

5. এ দেখে তাঁর স্ত্রী ঈষেবল তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “কেন তুমি মন খারাপ করে আছ? কেন খেতে চাইছ না?”

6. জবাবে বাদশাহ্‌ তাঁকে বললেন, “আমি যিষ্রিয়েলীয় নাবোৎকে বলেছিলাম তার আংগুর ক্ষেতটা আমার কাছে বিক্রি করে দিতে কিংবা সে চাইলে তার বদলে আমি তাকে আর একটা আংগুর ক্ষেতও দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সে বলল যে, সে তার আংগুর ক্ষেতটা আমাকে দেবে না।”

7. তখন তাঁর স্ত্রী ঈষেবল তাঁকে বললেন, “তুমি না ইসরাইলের বাদশাহ্‌? ওঠো, খাওয়া-দাওয়া কর, আনন্দিত হও। যিষ্রিয়েলীয় নাবোতের আংগুর ক্ষেত আমি তোমাকে দেব।”

8. ঈষেবল তখন আহাবের নাম করে কতগুলো চিঠি লিখে সেগুলোর উপর আহাবের সীলমোহর দিলেন এবং নাবোতের শহরে বাসকারী বৃদ্ধ নেতা ও গণ্যমান্য লোকদের কাছে চিঠিগুলো পাঠিয়ে দিলেন।

9. সেই চিঠিগুলোতে তিনি লিখেছিলেন, “আপনারা রোজা রাখবার কথা ঘোষণা করুন এবং লোকদের মধ্যে নাবোৎকে একটা বিশেষ স্থান দিন।

10. তার সামনে দু’টা আসনে দু’জন খারাপ লোককে বসান। তারা এই বলে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিক যে, সে আল্লাহ্‌ ও বাদশাহ্‌র বিরুদ্ধে অপমানের কথা বলেছে। তারপর তাকে সেখান থেকে বের করে নিয়ে পাথর ছুঁড়ে হত্যা করুন।”

11. কাজেই নাবোতের শহরে বাসকারী বৃদ্ধ নেতারা ও গণ্যমান্য লোকেরা ঈষেবলের চিঠিতে লেখা নির্দেশমত কাজ করলেন।

12. তাঁরা রোজা রাখবার কথা ঘোষণা করে নাবোৎকে লোকদের মধ্যে একটা বিশেষ স্থান দিলেন।

13. তারপর দু’জন খারাপ লোক এসে নাবোতের সামনে বসে লোকদের কাছে তার বিরুদ্ধে এই সাক্ষ্য দিল যে, সে আল্লাহ্‌ ও বাদশাহ্‌র বিরুদ্ধে অপমানের কথা বলেছে। তারপর লোকেরা তাকে শহরের বাইরে নিয়ে গিয়ে পাথর ছুঁড়ে হত্যা করল।

14. এর পর সেই নেতারা ঈষেবলের কাছে খবর পাঠালেন যে, নাবোৎকে পাথর ছুঁড়ে হত্যা করা হয়েছে।

15. নাবোৎকে পাথর ছুঁড়ে হত্যা করা হয়েছে শুনেই ঈষেবল আহাবকে বললেন, “যাও, যিষ্রিয়েলীয় নাবোৎ যে আংগুর ক্ষেতটা তোমার কাছে বিক্রি করতে চায় নি তার দখল নাও। সে আর বেঁচে নেই, মরে গেছে।”

16. নাবোৎ মারা গেছে শুনে আহাব নাবোতের আংগুর ক্ষেতের দখল নিতে গেলেন।

17. তখন তিশ্‌বীয় ইলিয়াসের উপর মাবুদের এই কালাম নাজেল হল,

18. “সামেরিয়াতে ইসরাইলের বাদশাহ্‌ আহাবের সংগে দেখা করতে যাও। সে এখন নাবোতের আংগুর ক্ষেতে আছে। সে ওটার দখল নেবার জন্য সেখানে গেছে।

19. তুমি তাকে বল যে, মাবুদ বলছেন, ‘তুমি কি একজন লোককে হত্যা করে তার সম্পত্তি দখল কর নি?’ তারপর তাকে বল যে, মাবুদ বলছেন, ‘কুকুরেরা যেখানে নাবোতের রক্ত চেটে খেয়েছে সেখানে তারা তোমার রক্ত, জ্বী, তোমারই রক্ত চেটে খাবে।’ ”

20. আহাব সেই কথা শুনে ইলিয়াসকে বললেন, “হে আমার শত্রু, এবার তুমি আমাকে পেয়েছ।”জবাবে ইলিয়াস বললেন, “জ্বী, পেয়েছি, কারণ মাবুদের চোখে যা খারাপ তা-ই করবার জন্য আপনি নিজেকে বিকিয়ে দিয়েছেন।

21. সেইজন্য মাবুদ বলছেন, ‘আমি তোমার উপর বিপদ নিয়ে আসব। তোমাকে আমি একেবারে ধ্বংস করব। গোলাম হোক বা স্বাধীন হোক তোমার বংশের প্রত্যেকটি পুরুষ লোককে আমি শেষ করে দেব।

22. আমি তোমার বংশকে নবাটের ছেলে ইয়ারাবিম এবং অহিয়ের ছেলে বাশার বংশের মত করব, কারণ তুমি আমার রাগ জাগিয়ে তুলেছ এবং ইসরাইলকে দিয়ে গুনাহ্‌ করিয়েছ।

23. এছাড়া ঈষেবলের সম্বন্ধেও আমি বলছি যে, যিষ্রিয়েলের দেয়ালের কাছে কুকুরেরা তাকে খেয়ে ফেলবে।

24. তোমার যে সব লোক শহরে মরবে তাদের খাবে কুকুরে আর যারা মাঠের মধ্যে মরবে তাদের খাবে পাখীতে।’ ”

25. স্ত্রীর উস্কানিতে মাবুদের চোখে যা খারাপ আহাব তা-ই করবার জন্য নিজেকে বিকিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর মত আর কেউ এই রকম কাজ করে নি।

26. বনি-ইসরাইলদের সামনে থেকে মাবুদ যে আমোরীয়দের তাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাদের মত মূর্তি পূজা করে তিনি জঘন্য কাজ করতেন।

27. আহাব মাবুদের কথা শুনে নিজের কাপড় ছিঁড়ে ফেলে চট পরলেন এবং রোজা রাখলেন। তিনি চট পরেই শুয়ে থাকতেন এবং নম্রভাবে চলাফেরা করতে লাগলেন।

28. তখন মাবুদ তিশ্‌বীয় ইলিয়াসকে বললেন,

29. “তুমি কি লক্ষ্য করেছ আহাব আমার সামনে নিজেকে কেমন নত করেছে? সে নিজেকে নত করেছে বলে এই বিপদ আমি তার জীবনকালে আনব না, কিন্তু তার ছেলের জীবনকালে তার বংশের উপরে আনব।”