অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31
  32. 32
  33. 33
  34. 34
  35. 35
  36. 36
  37. 37
  38. 38
  39. 39
  40. 40

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

হিজরত 12 Kitabul Mukkadas (MBCL)

উদ্ধার-ঈদ

1. পরে মাবুদ মিসর দেশে মূসা ও হারুনকে বললেন,

2. “এই মাসটাই হবে তোমাদের প্রথম মাস, তোমাদের বছরের প্রথম মাস।

3. তোমরা সমস্ত বনি-ইসরাইলদের জমায়েত করে বলে দাও যেন এই মাসের দশ তারিখে প্রত্যেকটি পরিবারের কর্তা নিজের পরিবারের জন্য একটা করে ভেড়ার বাচ্চা বেছে নেয়। প্রত্যেক বাড়ীর জন্য একটা করে ভেড়ার বাচ্চা নিতে হবে।

4. কোন পরিবারের জন্য যদি একটা গোটা ভেড়ার বাচ্চা না লাগে, তবে পাশের বাড়ীর লোকদের সংগে তা ভাগ করে নিতে হবে। দুই পরিবারের লোকসংখ্যা অনুসারে প্রত্যেকে কি পরিমাণে খেতে পারবে তা বুঝে ভেড়ার বাচ্চাটা নিতে হবে।

5. সেই বাচ্চাটা হবে ছাগল বা ভেড়ার পাল থেকে বেছে নেওয়া একটা এক বছরের পুরুষ বাচ্চা। তার শরীরে যেন কোথাও কোন খুঁত না থাকে।

6. বাচ্চাটা এই মাসের চৌদ্দ তারিখ পর্যন্ত রাখতে হবে। তারপর সেই দিন বেলা ডুবে গেলে পর গোটা ইসরাইল সমাজের প্রত্যেকটি পরিবার নিজের নিজের ভেড়ার বাচ্চা জবাই করবে।

7. তারপর যে সব ঘরে তারা সেই ভেড়ার গোশ্‌ত খাবে সেই সব ঘরের দরজার চৌকাঠের দু’পাশে এবং উপরে কিছু রক্ত নিয়ে লাগিয়ে দেবে।

8. সেই রাতেই তারা সেই গোশ্‌ত আগুনে সেঁকে খামিহীন রুটি এবং তেতো শাকের সংগে খাবে।

9. সেই গোশ্‌ত তোমরা কাঁচা বা পানিতে সিদ্ধ করে খাবে না, কিন্তু মাথা, পা এবং ভিতরের অংশগুলো সুদ্ধ তা আগুনে সেঁকে নিয়ে খাবে।

10. সকাল পর্যন্ত তার কোন কিছুই ফেলে রেখো না। যদি কিছু বাকী থাকে তবে তা আগুনে পুড়িয়ে ফেলবে।

11. তোমরা এই অবস্থায় তা খাবে: তোমাদের কাপড় থাকবে কোমরে গুটানো, পায়ে থাকবে জুতা এবং হাতে লাঠি। তোমরা তাড়াহুড়া করে খাবে। এটা হল মাবুদের উদ্দেশে উদ্ধার-ঈদের মেজবানী।

12. সেই রাতেই আমি মিসর দেশের ভিতর দিয়ে যাব এবং মানুষের প্রথম ছেলে ও পশুর প্রথম পুরুষ বাচ্চাকে মেরে ফেলব। আমি মিসরের সব দেব-দেবীদের উপর গজব নাজেল করব; আমি মাবুদ।

13. কিন্তু তোমাদের ঘরে যে রক্ত লাগানো থাকবে সেটাই হবে তোমাদের চিহ্ন। আর আমি সেই রক্ত দেখে তোমাদের বাদ দিয়ে এগিয়ে যাব। তাতে মিসর দেশের উপর আমার গজবের বিপদ থেকে তোমরা রেহাই পেয়ে যাবে।

14. তোমাদের জন্য সেই দিনটা হবে একটা স্মরণীয় দিন। মাবুদের উদ্দেশে এই ঈদটি একটা চিরকালের নিয়ম হিসাবে তোমরা বংশের পর বংশ ধরে পালন করবে।

15. “তোমরা সাত দিন পর্যন্ত খামিহীন রুটি খাবে। তোমাদের বাড়ীতে যত খামি আছে প্রথম দিনেই তোমরা তা সব সরিয়ে ফেলবে। এই সাত দিনের মধ্যে যদি কেউ খামি দেওয়া রুটি খায় তবে তাকে বনি-ইসরাইলদের মধ্য থেকে মুছে ফেলা হবে।

16. প্রথম এবং সপ্তম দিনে তোমরা পবিত্র মিলন-মাহ্‌ফিল করবে। এই দু’দিন তোমরা নিজেদের খাবার তৈরী করা ছাড়া আর কোন কাজ করবে না।

17. খামিহীন রুটির এই যে ঈদ তা একটা চিরকালের নিয়ম হিসাবে তোমরা বংশের পর বংশ ধরে পালন করবে, কারণ এই দিনেই সৈন্যদলের মত করে আমি মিসর দেশ থেকে তোমাদের বের করে আনব।

18. তোমরা প্রথম মাসের চৌদ্দ তারিখের সন্ধ্যাবেলা থেকে শুরু করে সেই মাসের একুশ তারিখের সন্ধ্যাবেলা পর্যন্ত খামিহীন রুটি খাবে।

19. এই সাত দিন তোমাদের বাড়ীতে যেন কোন খামি না থাকে। যদি কেউ খামি-দেওয়া কোন কিছু খায়, তবে তাকে ইসরাইলীয় সমাজ থেকে মুছে ফেলা হবে, সে তোমাদের জাতির লোকই হোক বা অন্য জাতির লোকই হোক।

20. তোমরা যেখানেই থাক না কেন এই সাত দিন তোমরা খামি দেওয়া কোন কিছু খাবে না; রুটিও খাবে খামিহীন।”

21. তখন মূসা বনি-ইসরাইলদের বৃদ্ধ নেতাদের ডেকে বললেন, “তোমাদের পরিবারের জন্য ভেড়ার বাচ্চা বেছে নিয়ে উদ্ধার-ঈদের উদ্দেশ্যে তা জবাই করবে।

22. তারপর এসোব ঝোপ থেকে এক গোছা ডাল নিয়ে পেয়ালাতে রাখা রক্তে ডুবিয়ে সেই রক্ত দরজার চৌকাঠের দু’পাশে ও উপরের কাঠে লাগিয়ে দেবে; আর সকাল না হওয়া পর্যন্ত কেউ ঘরের বাইরে যাবে না।

23. মিসরীয়দের আঘাত করবার সময় মাবুদ যখন মিসর দেশের ভিতর দিয়ে যাবেন তখন তোমাদের দরজার চৌকাঠে রক্ত দেখে তিনি তোমাদের দরজা বাদ দিয়ে এগিয়ে যাবেন। যিনি এই ধ্বংসের কাজ করবেন তাঁকে তিনি তোমাদের বাড়ীতে ঢুকে তোমাদের আঘাত করতে দেবেন না।

24. “এই ঈদ সব সময় তোমরা ও তোমাদের বংশধরেরা একটা নিয়ম হিসাবে পালন করবে।

25. মাবুদ যে দেশ তোমাদের দেবার ওয়াদা করেছেন সেই দেশে গিয়েও তোমরা এই ঈদ পালন করবে।

26. তোমাদের ছেলেমেয়েরা যখন তোমাদের জিজ্ঞাসা করবে, ‘এই ঈদের মানে কি?’

27. তখন তোমরা বলবে, ‘এটা হল মাবুদের উদ্দেশে উদ্ধার-ঈদের কোরবানী, কারণ মিসর দেশে থাকবার সময় তিনি বনি-ইসরাইলদের বাড়ীগুলো বাদ দিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি মিসরীয়দের মেরে ফেলেছিলেন কিন্তু আমাদের রক্ষা করেছিলেন।’ ” এর পর বনি-ইসরাইলরা মাবুদকে সেজদা করল।

28. মূসা ও হারুনকে মাবুদ যে হুকুম দিয়েছিলেন বনি-ইসরাইলরা ফিরে গিয়ে সেইমত কাজ করল।

29. তারপর চৌদ্দ তারিখের মাঝরাতে মাবুদ মিসর দেশের প্রত্যেকটি প্রথম ছেলেকে মেরে ফেললেন। এতে রাজ-সিংহাসনের অধিকারী ফেরাউনের প্রথম ছেলে থেকে জেলখানার কয়েদীর প্রথম ছেলে পর্যন্ত, এমন কি, পশুদেরও প্রথম পুরুষ বাচ্চা মারা পড়ল।

30. সেই রাতে ফেরাউন ও তাঁর সব কর্মচারী এবং মিসরের প্রত্যেকটি লোক ঘুম থেকে জেগে উঠল; আর সারা মিসর দেশে একটা কান্নার রোল পড়ে গেল, কারণ এমন একটাও বাড়ী ছিল না যেখানে কেউ মারা যায় নি।

মিসর থেকে যাত্রা শুরু

31. ফেরাউন সেই রাতেই মূসা ও হারুনকে ডাকিয়ে এনে বললেন, “তোমরা বনি-ইসরাইলদের সংগে নিয়ে আমার লোকদের মধ্য থেকে বের হয়ে যাও। তোমরা যেমন বলেছ সেইভাবে গিয়ে মাবুদের এবাদত কর।

32. তোমাদের কথামত যাবার সময়ে তোমাদের গরু-ভেড়ার পালও নিয়ে যেয়ো, আর আমাকেও দোয়া কোরো।”

33. মিসরীয়দেরও ভয় হল যে, তারাও হয়তো মারা পড়বে। এইজন্য তারা বনি-ইসরাইলদের তাগাদা দিতে লাগল যেন তারা তাড়াতাড়ি করে তাদের দেশ থেকে বের হয়ে যায়।

34. এতে বনি-ইসরাইলরা খামি মেশাবার আগেই তাদের ময়দা মাখবার পাত্র সুদ্ধ ময়দার তালগুলো তাদের কাপড়ে বেঁধে নিয়ে কাঁধে ফেলল।

35. বনি-ইসরাইলরা মূসার কথামত মিসরীয়দের কাছ থেকে সোনা-রূপার জিনিস এবং কাপড়-চোপড় চেয়ে নিল।

36. তারা যা চাইবে মিসরীয়রা যাতে তাদের তা-ই দেয় সেইজন্য মাবুদ আগেই মিসরীয়দের মনে বনি-ইসরাইলদের প্রতি একটা দয়ার মনোভাব সৃষ্টি করেছিলেন। এইভাবে তারা মিসরীয়দের অনেক কিছু অধিকার করে নিলেন।

37. তারপর বনি-ইসরাইলরা রামিষেষ থেকে সুক্কোতের দিকে রওনা হল। প্রায় ছয় লক্ষ পুরুষ লোক হেঁটে চলল। তাদের সংগে স্ত্রীলোক এবং ছেলেমেয়েরাও ছিল।

38. বনি-ইসরাইলরা ছাড়া আরও অনেক লোক এবং গরু-ভেড়া সুদ্ধ একটা বিরাট পশুর দলও তাদের সংগে ছিল।

39. যে খামিহীন ময়দার তাল তারা মিসর থেকে নিয়ে এসেছিল পথে তারা তা দিয়ে রুটি তৈরী করে নিল। এত তাড়াহুড়ো করে মিসর থেকে তাদের বের করে দেওয়া হয়েছিল যে, তারা ময়দার সংগে খামি মেশাবারও সময় পায় নি আর পথে খাবার জন্য কোন কিছু তৈরীও করে নিতে পারে নি।

40. মিসর দেশে বনি-ইসরাইলরা মোট চারশো ত্রিশ বছর বাস করেছিল।

41. চারশো ত্রিশ বছর শেষ হবার দিনই মাবুদের সমস্ত বান্দা সৈন্যদলের মত করে মিসর দেশ ছেড়ে বের হয়ে এসেছিল।

42. মাবুদ সেই রাতে পাহারা দিয়ে মিসর দেশ থেকে তাদের বের করে এনেছিলেন বলে বংশের পর বংশ ধরে বনি-ইসরাইলদেরও মাবুদের কথা মনে করে সেই রাতটা জেগে কাটাতে হয়।

উদ্ধার-ঈদ পালনের নিয়ম

43. পরে মাবুদ মূসা ও হারুনকে বললেন, “উদ্ধার-ঈদের ভেড়ার বাচ্চা সম্বন্ধে কতগুলো নিয়ম আমি তোমাদের দিচ্ছি। অন্য কোন জাতির লোক এর গোশ্‌ত খেতে পারবে না।

44. টাকা দিয়ে কেনা গোলাম খৎনা করাবার পরে তা খেতে পারবে।

45. তোমাদের মধ্যে বাস করতে এসেছে কিংবা টাকা দিয়ে খাটানো হচ্ছে এমন অন্য কোন জাতির লোক তা খেতে পারবে না।

46. যে বাড়ীতে ভেড়ার বাচ্চা জবাই করা হবে সেই বাড়ীতেই তা খেতে হবে। বাড়ীর বাইরে তা নেওয়া চলবে না এবং সেই ভেড়ার একটা হাড়ও ভাংগা চলবে না।

47. “ইসরাইলীয়দের সকলকেই এই ঈদ পালন করতে হবে।

48. তোমাদের মধ্যে বাস করা অন্য জাতির কোন লোক যদি মাবুদের উদ্দেশে করা এই উদ্ধার-ঈদ পালন করতে চায় তবে আগে তার পরিবারের সব পুরুষের খৎনা করাতে হবে। তারপর সে বনি-ইসরাইলদের মতই তা পালন করতে পারবে। কিন্তু খৎনা করানো হয় নি এমন কোন লোক এই ঈদের গোশ্‌ত খেতে পারবে না।

49. বনি-ইসরাইলদের জন্য এবং তোমাদের মধ্যে বাস করা অন্যান্য জাতির লোকদের জন্য এই একই নির্দেশ রইল।”

50. মাবুদ মূসা ও হারুনকে যে হুকুম দিয়েছিলেন বনি-ইসরাইলরা ঠিক তা-ই করেছিল।

51. মাবুদ সেই দিনই সৈন্যদলের মত করে বনি-ইসরাইলদের মিসর দেশ থেকে বের করে এনেছিলেন।