অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31
  32. 32
  33. 33
  34. 34
  35. 35
  36. 36

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

শুমারী 16 Kitabul Mukkadas (MBCL)

হযরত মূসা (আঃ)-এর বিরুদ্ধে কারুনের বিদ্রোহ

1-2. লেবি-গোষ্ঠীর যিষ্‌হরের ছেলে কারুন এবং রূবেণ-গোষ্ঠীর ইলীয়াবের ছেলে দাথন ও অবীরাম আর পেলতের ছেলে ওন মূসার বিরুদ্ধে দাঁড়াল। কারুন ছিল লেবির ছেলে কহাতের নাতি। এদের সংগে যোগ দিল দু’শো পঞ্চাশ জন ইসরাইলীয় যারা ছিল সমাজের নাম-করা বেছে নেওয়া নেতা।

3. তারা মূসা ও হারুনের বিরুদ্ধে দল বেঁধে এসে বলল, “আপনারা খুব বাড়াবাড়ি করছেন। গোটা ইসরাইলীয় সমাজের প্রত্যেকেই পাক-পবিত্র এবং মাবুদও তাদের সংগে আছেন। তবে আপনারা কেন মাবুদের বান্দাদের উপরে নিজেদের তুলে ধরেছেন?”

4. এই কথা শুনে মূসা মাটির উপর উবুড় হয়ে পড়লেন।

5. তিনি কারুন ও তার দলের লোকদের বললেন, “কাল সকালেই মাবুদ দেখিয়ে দেবেন কে তাঁর বান্দা এবং কে পাক-পবিত্র। তিনিই সেই বান্দাকে তাঁর সামনে যেতে দেবেন। যাকে তিনি বেছে নেবেন তাকে তিনি তাঁর সামনে যেতে দেবেন।

6-7. কারুন, তুমি ও তোমার দলের লোকেরা একটা কাজ করবে। তোমরা ধূপদানি নিয়ে কালকে মাবুদের সামনে তার মধ্যে আগুন ও ধূপ দেবে। মাবুদ যাকে বেছে নেবেন বুঝতে হবে সে-ই তাঁর পাক-পবিত্র বান্দা। তোমরা লেবীয়রাই বেশী বাড়াবাড়ি করছ।”

8. মূসা কারুনকে আরও বললেন, “তোমরা লেবীয়রা এখন আমার কথা শোন।

9. এটাই কি তোমাদের পক্ষে যথেষ্ট নয় যে, বনি-ইসরাইলদের আল্লাহ্‌ সমাজের অন্য লোকদের থেকে তোমাদের আলাদা করে নিজের কাছে নিয়ে এসেছেন যাতে তোমরা মাবুদের আবাস-তাম্বুর কাজ করতে পার এবং সমাজের লোকদের সেবা করবার জন্য তাদের সামনে দাঁড়াতে পার?

10. তিনি তোমাকে এবং অন্য সব লেবীয়দের নিজের কাছে নিয়ে এসেছেন, কিন্তু তোমরা এখন ইমামের পদটাও দখল করে নিতে চাইছ।

11. তুমি ও তোমার দলের সব লোকেরা মাবুদের বিরুদ্ধেই দল পাকিয়েছ। হারুন কে যে, তোমরা তার বিরুদ্ধে বক্‌বক্‌ করছ?”

12. এর পর মূসা ইলীয়াবের ছেলে দাথন ও অবীরামকে ডেকে পাঠালেন কিন্তু তারা বলে পাঠাল, “আমরা যাব না।

13. তুমি এই মরুভূমিতে মেরে ফেলবার জন্যই এমন দেশ থেকে আমাদের বের করে এনেছ যেখানে দুধ, মধু আর কোন কিছুর অভাব ছিল না। এটাই কি যথেষ্ট নয়? তার উপর এখন আবার আমাদের কর্তা হতে চাইছ।

14. এছাড়া তুমি তো সেই রকম কোন দুধ আর মধুতে ভরা দেশে আমাদের নিয়ে যাও নি কিংবা জমাজমি এবং আংগুর ক্ষেতের অধিকারও দাও নি। তুমি কি এই লোকদের অন্ধ করে রাখতে চাইছ? না, আমরা যাব না।”

15. এই কথা শুনে মূসা ভীষণ রেগে গিয়ে মাবুদকে বললেন, “তুমি ওদের কোরবানী কবুল কোরো না। আমি ওদের কাছ থেকে একটা গাধা পর্যন্ত নিই নি আর ওদের কোন ক্ষতিও করি নি।”

16. তারপর মূসা কারুনকে বললেন, “কাল তোমাকে ও তোমার দলের সবাইকে মাবুদের সামনে উপস্থিত হতে হবে। তুমি ও তোমার দলের লোকদের এবং সেই সংগে হারুনকেও উপস্থিত হতে হবে।

17. প্রত্যেককে তার ধূপদানিতে ধূপ দিতে হবে; মোট দু’শো পঞ্চাশটা ধূপদানিতে ধূপ দিয়ে মাবুদের সামনে তা কোরবানী করতে হবে। তোমাকে এবং হারুনকেও ধূপদানিতে ধূপ কোরবানী করতে হবে।”

18. মূসার কথামত প্রত্যেকে নিজের নিজের ধূপদানিতে আগুন ও ধূপ নিয়ে মিলন-তাম্বুর দরজার সামনে মূসা ও হারুনের সংগে গিয়ে দাঁড়াল।

19. কারুন যখন মূসা ও হারুনের বিরুদ্ধে সমাজের সমস্ত লোকদের জমায়েত করে মিলন-তাম্বুর দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়াল তখন তাদের সকলের সামনে মাবুদের মহিমা দেখা দিল।

20. মাবুদ মূসা ও হারুনকে বললেন,

21. “তোমরা অন্য সমস্ত লোক থেকে আলাদা হয়ে যাও, যাতে আমি তাদের এই মুহূর্তে শেষ করে দিতে পারি।”

22. কিন্তু মূসা ও হারুন সেজদায় পড়ে বললেন, “হে আল্লাহ্‌, তুমি সমস্ত মানুষের জীবনদাতা। কেবল একজন মানুষ গুনাহ্‌ করেছে বলে কি তুমি গোটা ইসরাইলীয় সমাজের উপর তোমার গজব নাজেল করবে?”

23. তখন মাবুদ মূসাকে বললেন,

24. “তুমি বনি-ইসরাইলদের বল যেন তারা কারুন, দাথন আর অবীরামের তাম্বুর কাছ থেকে সরে যায়।”

25. এই কথা শুনে মূসা উঠে দাথন ও অবীরামের কাছে গেলেন আর ইসরাইলীয় বৃদ্ধ নেতারা তাঁর পিছনে পিছনে গেলেন।

26. মূসা বনি-ইসরাইলদের বললেন, “তোমরা এই দুষ্ট লোকদের তাম্বুর কাছ থেকে সরে যাও। তাদের কোন জিনিস তোমরা ছুঁয়ো না; যদি তা কর তবে তাদের গুনাহের জন্য তোমাদেরও শেষ করে ফেলা হবে।”

27. এই কথা শুনে লোকেরা কারুন, দাথন ও অবীরামের তাম্বুর কাছ থেকে সরে গেল। এর মধ্যে দাথন ও অবীরাম তাদের স্ত্রী ও ছোট-বড় ছেলেমেয়েদের নিয়ে তাম্বুর দরজার কাছে বের হয়ে এসে দাঁড়িয়ে ছিল।

28. মূসা তখন বনি-ইসরাইলদের বললেন, “এতেই তোমরা বুঝতে পারবে যে, আমি যা করছি তা করবার জন্য মাবুদই আমাকে পাঠিয়েছেন; এটা আমার মনগড়া কিছু নয়।

29. এই সমস্ত লোকদের যদি স্বাভাবিক মৃত্যু হয়, আর অন্য মানুষের যা হয় তা থেকে আলাদা কিছু না হয় তাহলে বুঝতে হবে মাবুদ আমাকে পাঠান নি।

30. কিন্তু মাবুদ যদি সম্পূর্ণ নতুন কিছু করেন এবং দুনিয়া মুখ খুলে যদি তাদের এবং তাদের সব কিছু গিলে ফেলে আর যদি তারা জীবিত অবস্থায় কবরে চলে যায় তবে তোমরা বুঝবে যে, এই লোকেরা মাবুদকে তুচ্ছ করেছে।”

31. মূসার এই কথা বলা শেষ হওয়ার সংগে সংগে ঐ সব লোকদের পায়ের নীচের মাটি দু’ভাগ হয়ে গেল,

32. আর দুনিয়া মুখ খুলে কারুনের পরিবারের সমস্ত লোক এবং সব কিছু গিলে ফেলল।

33. তাদের যা কিছু ছিল সব নিয়ে তারা জীবিত অবস্থায় কবরে চলে গেল। তারপর তাদের উপরকার সেই ফাটলটা বন্ধ হয়ে গেল। তারা বনি-ইসরাইলদের মধ্য থেকে ধ্বংস হয়ে গেল।

34. তাদের কান্নায় চারপাশের সমস্ত বনি-ইসরাইল চিৎকার করে এই কথা বলতে বলতে ছুটে পালাল, “দুনিয়া হয়তো আমাদেরও গিলে ফেলবে।”

35. এদিকে যে দু’শো পঞ্চাশজন লোক ধূপ কোরবানী করছিল মাবুদের কাছ থেকে আগুন বের হয়ে এসে তাদের পুড়িয়ে ফেলল।

36. মাবুদ মূসাকে বললেন,

37. “তুমি ইমাম হারুনের ছেলে ইলীয়াসরকে বল যেন সে ঐ পোড়া জায়গা থেকে ধুপদানিগুলো বের করে নিয়ে কয়লাগুলো কিছু দূরে নিয়ে ছড়িয়ে দেয়, কারণ ধূপদানিগুলো পাক-পবিত্র হয়ে গেছে।

38. গুনাহ্‌ করবার দরুন যে সমস্ত লোককে মরতে হয়েছে ধূপদানিগুলো তাদেরই। কিন্তু সেগুলো মাবুদের সামনে উপস্থিত করা হয়েছিল বলে সেগুলো পাক-পবিত্র হয়ে গেছে। সেইজন্য তুমি সেগুলো পিটিয়ে পাত তৈরী করে তা দিয়ে কোরবানগাহ্‌টি মুড়িয়ে দিয়ো। এটা যেন বনি-ইসরাইলদের কাছে একটা চিহ্ন হয়ে থাকে।”

39. যে লোকদের পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল তাদের আনা ব্রোঞ্জের ধূপদানিগুলো ইমাম ইলীয়াসর জড়ো করলেন। তারপর কোরবানগাহ্‌টি মুড়াবার জন্য তিনি সেগুলো পিটিয়ে পাত তৈরী করালেন।

40. মূসার মধ্য দিয়ে মাবুদ তাঁকে যে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি তা-ই করলেন। এটা করা হল যাতে বনি-ইসরাইলরা মনে রাখে যে, হারুনের বংশধর ছাড়া আর কেউ ধূপ জ্বালাবার জন্য মাবুদের সামনে যেতে পারবে না; যদি কেউ যায় তবে তার অবস্থা কারুন ও তার দলের লোকদের মতই হবে।

41. এর পরের দিন ইসরাইলীয় সমাজের সবাই মূসা ও হারুনের বিরুদ্ধে বক্‌বক্‌ করতে লাগল এবং বলল, “তোমরাই মাবুদের বান্দাদের হত্যা করেছ।”

42. কিন্তু যখন সমাজের সব লোকেরা মূসা ও হারুনের বিরুদ্ধে জমায়েত হয়ে মিলন-তাম্বুর দিকে ঘুরে দাঁড়াল তখন হঠাৎ মিলন-তাম্বুটা সেই মেঘে ঢেকে গেল এবং মাবুদের মহিমা প্রকাশ পেল।

43. তখন মূসা ও হারুন মিলন-তাম্বুর সামনে গেলেন,

44. আর মাবুদ মূসাকে বললেন,

45. “তোমরা এদের কাছ থেকে সরে যাও; আমি এখনই এদের শেষ করে দেব।” এই কথা শুনে তাঁরা সেজদায় পড়লেন।

46. তারপর মূসা হারুনকে বললেন, “তোমার ধূপদানি নিয়ে তাতে কোরবানগাহের আগুন ভরে তার উপর ধূপ দাও আর তাড়াতাড়ি করে ঐ লোকদের কাছে গিয়ে তাদের গুনাহ্‌ ঢাকবার ব্যবস্থা কর। মাবুদের রাগ প্রকাশ পেয়েছে, মহামারী শুরু হয়ে গেছে।”

47. তখন হারুন মূসার কথামতই ধূপদানিতে আগুন আর ধূপ দিয়ে ঐ সব লোকদের মধ্যে ছুটে গেলেন। এর মধ্যেই লোকদের মাঝে মহামারী শুরু হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু হারুন ধূপ কোরবানী করে তাদের গুনাহ্‌ ঢাকা দেবার ব্যবস্থা করলেন।

48. তিনি জীবিত ও মৃতদের মাঝখানে গিয়ে দাঁড়ালেন আর মহামারী থেমে গেল।

49. কারুনের দরুন যারা মারা গিয়েছিল তারা ছাড়া আরও চৌদ্দ হাজার সাতশো লোক মহামারীতে মারা গেল।

50. মহামারী থেমে যাবার পরে হারুন মিলন-তাম্বুর দরজায় মূসার কাছে ফিরে গেলেন।