14. তখন দলীলা তাঁর চুল তাঁতে বুনে গোঁজের সংগে আঁটকে রেখে তাঁকে বলল, “শামাউন, ফিলিস্তিনীরা তোমাকে ধরতে এসেছে।” তখন শামাউন ঘুম থেকে জেগে উঠে গোঁজ আর তাঁতটা উপ্ড়ে ফেললেন।
15. এতে দলীলা তাঁকে বলল, “কেমন করে তুমি আমাকে বলতে পার যে, তুমি আমাকে ভালবাস? তোমার মন তো আমার উপরে নেই। এই নিয়ে তৃতীয়বার তুমি আমাকে বোকা বানালে। তোমার এই মহাশক্তির গোপন কথাটা আমাকে জানালে না।”
16. এইভাবে দিনের পর দিন সে তার কথা দিয়ে তাঁকে এমনভাবে জ্বালাতে লাগল যে, তাঁর জীবনের উপর একটা বিরক্তি এসে গেল।
17. কাজেই তিনি তাকে সব কথা খুলে বললেন। তিনি বললেন, “আমার মাথায় কখনও ক্ষুর দেওয়া হয় নি। জন্ম থেকেই আমি আল্লাহ্র উদ্দেশে একজন নাসরীয়। আমার মাথা কামানো হলে আমার শক্তি আমাকে ছেড়ে যাবে। তাতে আমি অন্য যে কোন লোকের মতই দুর্বল হয়ে পড়ব।”
18. দলীলা যখন বুঝল যে, তিনি তাকে সব কথা খুলে বলেছেন তখন সে ফিলিস্তিনী শাসনকর্তাদের কাছে এই বলে খবর পাঠাল, “আপনারা আর একবার আসুন। সে আমাকে সব কথা খুলে বলেছে।” কাজেই ফিলিস্তিনীদের শাসনকর্তারা রূপা সংগে নিয়ে আসলেন।
19. দলীলা শামাউনকে তার কোলে ঘুম পাড়াল এবং তাঁর সাত গোছা চুল কামিয়ে ফেলবার জন্য একজন লোককে ডাকল। এইভাবে সে তাঁকে কষ্টের মধ্যে ফেলল এবং তাঁর শক্তিও তাঁকে ছেড়ে গেল।
20. তারপর দলীলা তাঁকে বলল, “শামাউন, ফিলিস্তিনীরা তোমাকে ধরতে এসেছে।” শামাউন ঘুম থেকে জেগে উঠে ভাবলেন যে, তিনি আগের মতই বাইরে যাবেন এবং ঝাড়া দিয়ে নিজেকে মুক্ত করে নেবেন। কিন্তু তিনি জানতেন না যে, মাবুদ তাঁকে ছেড়ে চলে গেছেন।
21. তখন ফিলিস্তিনীরা তাঁকে ধরে তাঁর চোখ দু’টা তুলে ফেলল এবং তাঁকে গাজা শহরে নিয়ে গেল। তারা তাঁকে ব্রোঞ্জের শিকল দিয়ে বাঁধল এবং জেলখানার মধ্যে তাঁকে দিয়ে জাঁতা ঘুরাবার কাজ করাতে লাগল।
22. কিন্তু তাঁর মাথার চুল কামিয়ে ফেলবার পর আবার তা গজাতে লাগল।
23. এর পর ফিলিস্তিনীদের শাসনকর্তারা তাঁদের দেবতা দাগোনের কাছে একটা মস্ত বড় উৎসর্গ করে আনন্দ করবার জন্য এক জায়গায় জমায়েত হলেন। তাঁরা বললেন, “আমাদের দেবতা আমাদের শত্রু শামাউনকে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন।”
24. লোকেরা শামাউনকে দেখে এই কথা বলে তাদের দেবতার প্রশংসা করতে লাগল, “আমাদের দেবতা আমাদের হাতে আমাদের শত্রুকে তুলে দিয়েছেন; সে আমাদের জমি নষ্ট করেছে আর আমাদের অনেক লোককে মেরে ফেলেছে।”
25. তারপর তারা আনন্দে মেতে উঠে এই বলে চিৎকার করল, “শামাউনকে বের করে আনা হোক; আমরা তামাশা দেখব।” কাজেই তারা জেলখানা থেকে শামাউনকে বের করে আনল আর শামাউন তাদের তামাশা দেখাতে লাগলেন।তারা শামাউনকে থামগুলোর মাঝখানে দাঁড় করাল।
26. যে ছেলেটি তাঁর হাত ধরে ছিল শামাউন তাকে বললেন, “যে থামগুলোর উপর মন্দিরটা দাঁড়িয়ে আছে সেগুলো আমাকে ছুঁতে দাও যাতে আমি সেখানে হেলান দিতে পারি।”
27. সেই মন্দিরে অনেক পুরুষ ও স্ত্রীলোক জমা হয়েছিল, আর ফিলিস্তিনীদের সমস্ত শাসনকর্তারাও সেখানে ছিলেন। ছাদের উপর থেকে প্রায় তিন হাজার পুরুষ ও স্ত্রীলোক শামাউনের তামাশা দেখছিল।
28. তখন শামাউন মাবুদের কাছে মুনাজাত করে বললেন, “হে আল্লাহ্ মালিক, আমার কথা একবার মনে কর। হে আল্লাহ্, দয়া করে আর একটিবার মাত্র আমাকে শক্তি দাও যাতে আমার দু’টা চোখের জন্য একবারেই আমি ফিলিস্তিনীদের উপর প্রতিশোধ নিতে পারি।”
29. মাঝখানে যে দু’টা থামের উপর মন্দিরটা দাঁড়িয়ে ছিল শামাউন সেই দু’টা আঁকড়ে ধরলেন। তিনি ডান হাতটা একটা থামের উপর এবং বাঁ হাতটা অন্য থামের উপরে রেখে নিজের ভার থামগুলোর উপর দিলেন।
30. তারপর তিনি চিৎকার করে বললেন, “ফিলিস্তিনীদের সংগে আমারও মৃত্যু হোক!” এই বলে তিনি নীচু হয়ে সমস্ত শক্তি দিয়ে থাম দু’টা টান দিলেন। তাতে সব শাসনকর্তা ও ভিতরকার লোকদের উপর মন্দিরটা ভেংগে পড়ল। এইভাবে তিনি জীবিত থাকতে যত না লোক হত্যা করেছিলেন তার চেয়েও বেশী মারলেন তাঁর মৃত্যুর সময়ে।
31. শামাউনের ভাইয়েরা এবং তাঁর বাবার পরিবারের সবাই তাঁর মৃতদেহটা নিয়ে যাবার জন্য আসল। তারা তাঁকে নিয়ে গিয়ে সরা ও ইষ্টায়োলের মাঝখানে তাঁর বাবা মানোহের কবরের মধ্যে দাফন করল। শামাউন বিশ বছর বনি-ইসরাইলদের শাসন করেছিলেন।